১৮৯৬ সালে বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন।
ইউরেনিয়াম রূপালি-সাদা বর্ণের তেজস্ক্রিয় একটি ধাতু। ১৭৮৯ সালে জার্মান বিজ্ঞানী মার্টিন হাইনরিখ ক্ল্যাপরথ ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেন। তিনি ইউরেনাস গ্রহের নামানুসারে এর নামকরণ করেন ইউরেনিয়াম। কারণ সে সময় ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারের ঘটনা ছিল সবচেয়ে সাম্প্রতিক। কিন্তু প্রথম ইউরেনিয়াম সংশ্লেষ করা হয় ১৮৪১ সালে। এই সালে বিজ্ঞানী ইউজিন পেলিকট ইউরেনিয়াম টেট্রাক্লোরাইড থেকে প্রথম ইউরেনিয়াম সংশ্লেষ করেন। ১৯৪
০ সালে নেপচুনিয়াম আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত এটিই ছিল সবচেয়ে ভারী।
যেসব দেশে পাওয়া যায়:
প্রত্যেক বছর প্রায় ৫০ হাজার টোনের মত অশোধিত ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হয়। ২০১০ সালেই কেবল ৫৩ হাজার ৬৬৩ টোন ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হয়েছিল বিশ্বব্যাপী। এর মধ্যে ৩৩ দশমিক দুই শতাংশ কাজাখস্থান, ১৭ শতাংশ কানাডা, ৮ শতাংশ অস্ট্রেলিয়া, ৬ শতাংশ নামিবিয়া, ৫ শতাংশ নাইজার এবং বাকী অংশ রাশিয়াসহ অন্যান্য কয়েকটি দেশের খনি থেকে পাওয়া যায়।
ইউরেনিয়ামের ব্যবহার:
ইউরেনিয়াম খুবই দামি একটু ধাতু। পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর ক্ষেত্রে ইউরেনিয়াম একিট অপরিহার্য উপাদান। সে কারণেই এর বহন ও ব্যবসা বাণিজ্য সর্বসাধারণের জন্য নিষিদ্ধ। তবে সামরিক কাজ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পারমাণবিক বোমা:
পারমাণবিক মারণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে লিটল বয় ও ফ্যাটম্যান নামে যে দুটো বোমা নিক্ষেপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই দুটো বোমা তৈরিতেই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হয়েছিল। বর্তমান সময়ে ইরানের বিরুদ্ধেও পশ্চিমা বিশ্ব প্রায়ই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অভিযোগ তোলে। পশ্চিমা বিশ্বের ভয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে সক্ষম হবে। অবশ্য ইউরেনিয়াম থেকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়াটা বেশ জটিলতাযুক্ত।
সামরিক ব্যবহার:
সামরিক ক্ষেত্রে ইউরেনিয়ামের ব্যবহার সর্বাধিক। গোলা বারুদের ভেদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও ইউরেনিয়াম বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এর ফলে অস্ত্রের ধ্বংস ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গোলাবারুদের মধ্যে ইউরেনিয়াম ব্যবহারের মাধ্যমে ট্যাঙ্কের মত শক্তিশালী যুদ্ধযানকেও ধ্বংস করা সম্ভব। এছাড়াও তেজস্ক্রিয় অন্যান্য পদার্থ যেমন রেডিয়ামের কন্টেইনার থেকে তেজস্ক্রিয়তা বের হওয়া রোধ করতেও ইউরেনিয়াম ব্যবহৃত হয়। অবশ্য ইউরেনিয়াম নিজেও একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ। সামরিক ক্ষেত্রে ইউরেনিয়াম ব্যবহারের ফলে তেজস্ক্রিয়ার থেকেও বেশি ভয় হলো রাসায়নিক বিষক্রিয়া।
বেসামরিক ব্যবহার:
ইউরেনিয়ামের সবচেয়ে বড় বেসামরিক ব্যবহার হলো পারমাণবিক চুল্লিতে। বিদুৎ উৎপাদন করার জন্য পারমাণবিক চুল্লির জন্য ধাতুটির অত্যান্ত প্রয়োজনীয়। ১৫শ টন কয়লা থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব তার সমান বিদুৎ উৎপাদনের জন্য মাত্র ১ কেজি ইউরেনিয়ামই যথেষ্ট। মজার ব্যাপার হচ্ছে ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত অন্য কয়েকটি পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে কাঁচের শোপিস তৈরিতে ব্যবহৃত হত।
ইউরেনিয়ামের ক্ষতিকর দিক:
পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াও ইউরেনিয়ামের খনি ও কারখানায় কাজ করার মাধ্যমে যে কেউ ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসতে পারে। মানুষের কিডনি, মস্তিষ্ক, যকৃত, হৃদপিণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে ক্ষত্রিগস্ত হয়ে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী সময় ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে।
মুল টিউনঃ- এখানে
ইউরেনিয়াম রূপালি-সাদা বর্ণের তেজস্ক্রিয় একটি ধাতু। ১৭৮৯ সালে জার্মান বিজ্ঞানী মার্টিন হাইনরিখ ক্ল্যাপরথ ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেন। তিনি ইউরেনাস গ্রহের নামানুসারে এর নামকরণ করেন ইউরেনিয়াম। কারণ সে সময় ইউরেনাস গ্রহের আবিষ্কারের ঘটনা ছিল সবচেয়ে সাম্প্রতিক। কিন্তু প্রথম ইউরেনিয়াম সংশ্লেষ করা হয় ১৮৪১ সালে। এই সালে বিজ্ঞানী ইউজিন পেলিকট ইউরেনিয়াম টেট্রাক্লোরাইড থেকে প্রথম ইউরেনিয়াম সংশ্লেষ করেন। ১৯৪
০ সালে নেপচুনিয়াম আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত এটিই ছিল সবচেয়ে ভারী।
যেসব দেশে পাওয়া যায়:
প্রত্যেক বছর প্রায় ৫০ হাজার টোনের মত অশোধিত ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হয়। ২০১০ সালেই কেবল ৫৩ হাজার ৬৬৩ টোন ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হয়েছিল বিশ্বব্যাপী। এর মধ্যে ৩৩ দশমিক দুই শতাংশ কাজাখস্থান, ১৭ শতাংশ কানাডা, ৮ শতাংশ অস্ট্রেলিয়া, ৬ শতাংশ নামিবিয়া, ৫ শতাংশ নাইজার এবং বাকী অংশ রাশিয়াসহ অন্যান্য কয়েকটি দেশের খনি থেকে পাওয়া যায়।
ইউরেনিয়ামের ব্যবহার:
ইউরেনিয়াম খুবই দামি একটু ধাতু। পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর ক্ষেত্রে ইউরেনিয়াম একিট অপরিহার্য উপাদান। সে কারণেই এর বহন ও ব্যবসা বাণিজ্য সর্বসাধারণের জন্য নিষিদ্ধ। তবে সামরিক কাজ ছাড়াও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
পারমাণবিক বোমা:
পারমাণবিক মারণাস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে লিটল বয় ও ফ্যাটম্যান নামে যে দুটো বোমা নিক্ষেপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই দুটো বোমা তৈরিতেই ইউরেনিয়াম ব্যবহার করা হয়েছিল। বর্তমান সময়ে ইরানের বিরুদ্ধেও পশ্চিমা বিশ্ব প্রায়ই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অভিযোগ তোলে। পশ্চিমা বিশ্বের ভয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে সক্ষম হবে। অবশ্য ইউরেনিয়াম থেকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়াটা বেশ জটিলতাযুক্ত।
সামরিক ব্যবহার:
সামরিক ক্ষেত্রে ইউরেনিয়ামের ব্যবহার সর্বাধিক। গোলা বারুদের ভেদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও ইউরেনিয়াম বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এর ফলে অস্ত্রের ধ্বংস ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গোলাবারুদের মধ্যে ইউরেনিয়াম ব্যবহারের মাধ্যমে ট্যাঙ্কের মত শক্তিশালী যুদ্ধযানকেও ধ্বংস করা সম্ভব। এছাড়াও তেজস্ক্রিয় অন্যান্য পদার্থ যেমন রেডিয়ামের কন্টেইনার থেকে তেজস্ক্রিয়তা বের হওয়া রোধ করতেও ইউরেনিয়াম ব্যবহৃত হয়। অবশ্য ইউরেনিয়াম নিজেও একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ। সামরিক ক্ষেত্রে ইউরেনিয়াম ব্যবহারের ফলে তেজস্ক্রিয়ার থেকেও বেশি ভয় হলো রাসায়নিক বিষক্রিয়া।
বেসামরিক ব্যবহার:
ইউরেনিয়ামের সবচেয়ে বড় বেসামরিক ব্যবহার হলো পারমাণবিক চুল্লিতে। বিদুৎ উৎপাদন করার জন্য পারমাণবিক চুল্লির জন্য ধাতুটির অত্যান্ত প্রয়োজনীয়। ১৫শ টন কয়লা থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব তার সমান বিদুৎ উৎপাদনের জন্য মাত্র ১ কেজি ইউরেনিয়ামই যথেষ্ট। মজার ব্যাপার হচ্ছে ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত অন্য কয়েকটি পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে কাঁচের শোপিস তৈরিতে ব্যবহৃত হত।
ইউরেনিয়ামের ক্ষতিকর দিক:
পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়াও ইউরেনিয়ামের খনি ও কারখানায় কাজ করার মাধ্যমে যে কেউ ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসতে পারে। মানুষের কিডনি, মস্তিষ্ক, যকৃত, হৃদপিণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে ক্ষত্রিগস্ত হয়ে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী সময় ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে।
মুল টিউনঃ- এখানে
No comments:
Post a Comment