চলচ্চিত্রে হরহামেশাই দেখা যায় নায়ক বাইক নিয়ে শূন্যে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন, কিংবা এক দালানের ছাদ থেকে অন্য দালানের ছাদে লাফিয়ে বেড়াচ্ছেন খেলাচ্ছলে। এ ধরণের জীবন বাজি রেখে সাহসিকতার প্রদর্শনকে স্টান্ট (Stunt) বলা হয়। মজার ব্যাপার
হল
, চলচ্চিত্রে যেসব অদ্ভুত অদ্ভুত স্টান্ট দেখানো হয়, তার বেশিরভাগই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা। তারপরেও অনেক দৃশ্যই আছে যেগুলো সত্যি সত্যি জীবন বাজি রেখে করা হয়। কিন্তু বেশীরভাগ স্টান্টই নায়ক নিজে করে থাকেন না, এসব স্টান্ট দেখানোর জন্য থাকে স্টান্টম্যান, যারা পারদর্শী হন এধরণের ভয়ানক এবং বিপজ্জনক সাহসিকতা প্রদর্শনে। তারপরেও কিছু অভিনেতা আছেন যারা নিজেদের স্টান্ট নিজেরাই করতে পছন্দ করেন, যেমন হলিউডের টম ক্রুজ। মিশন ইম্পসিবল ৪-এ আমরা তাঁকে দেখি দুবাইয়ে অবস্থিত পৃথিবীর সর্বোচ্চ দালান বুর্জ খলিফার দেয়াল বেয়ে উঠতে। যদিও এধরণের কাজ করার সময় তাঁরা যথেষ্ট নিরাপত্তা বহন করেন, তবুও স্টান্ট করার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে এবং অভিনেতার প্রাণহানি ঘটার নজির পর্যন্ত আছে।
এখনকার সময়ের প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে যেকোনো ধরণের চিত্রই গ্রাফিক্সের মাধ্যমে তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু পূর্বের চলচ্চিত্রগুলোতে এত প্রযুক্তির ব্যবহার হত না, তাই বিপজ্জনক কাজগুলো অভিনেতাদের করতেই হত। তখন অবশ্য পেশাদার স্টান্টম্যানের চলন ছিল না, তাই পরিচালকরা সাহসী যে কাউকে এনে স্টান্ট করাতেন। সর্বপ্রথম যে দুজন ব্যক্তি পেশাদার স্টান্টম্যান হিসেবে হলিউডে কাজ শুরু করেন তাঁদের নাম ছিল বাস্টার কিটন এবং কিস্টোন কপস।
চলচ্চিত্রে স্টান্ট দেখাতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয় ৬০-এর দশকে। তখন শুন্য থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া, বুলেটের গতি দেখানো এধরণের স্টান্টের চলন শুরু হয়। চলচ্চিত্রে আলোড়ন পড়ে যায় কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে। কম্পিউটারে সৃষ্ট ছবিতে পরিচালকরা ইচ্ছেমত চিত্র তৈরি করতে পারেন, একে বলা হয় CGI বা Computer Generated Imagery। বিভিন্ন মারামারির দৃশ্য, গাড়ি দুর্ঘটনা, বিস্ফোরণ, এধরণের শুটিং করতে CGI-এর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু CGI-এ যেকোনো চিত্র তৈরির খরচ অনেক বেশী পড়ে, আবার CGI-এর চেয়ে সত্যিকার ধারণকৃত চিত্রই দর্শক বেশী পছন্দ করে, তাই চলচ্চিত্র জগতে সবসময়ই পারদর্শী স্টান্টম্যানের চাহিদা সবচেয়ে বেশী।
ছায়াছবিতে যখন দেখা যায় নায়ক ভিলেনকে লাথি-ঘুসি মেরে মেরে কাহিল করে ফেলছে, আসলে কিন্তু
সত্যি সত্যি তারা মারামারি করে না। তারা একে অপরকে এমনভাবেই আঘাত করে যাতে কারও কোন চোট না লাগে। কিন্তু এসবই ক্যামেরার কারসাজি, যেখানে দেখানো হয় নায়কের ঘুসি খেয়ে ভিলেন ছিটকে গিয়ে পড়ে যাচ্ছে। আবার আমরা দেখি যে কেউ একজন গুলি খেলো আর তার শরীর থেকে রক্ত পড়াও শুরু হল, যেন সত্যি সত্যি গুলি লেগেছে। চলচ্চিত্রে কখনোই সতিকার গুলি ব্যবহার করা হয় না। পিস্তলগুলো খালি-ই থাকে, অথবা ফাঁকা গুলি ভরা থাকে। আর যে অভিনেতার গুলি খাবার কথা, তার শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় এক ব্যাগ নকল রক্ত আটকানো থাকে। কিন্তু সঠিক সময়ে ব্যাগটি ফাটবে কীভাবে? তার জন্য ব্যবহার করা হয় খুবই ছোট মানের এক ধরণের রিমোট কন্ট্রোল বিস্ফোরক। সঠিক সময়ে রিমোটের সাহায্যে ব্যাগটি ফাটিয়ে শরীর থেকে রক্ত বের করা হয়। চলচ্চিত্রে অনেক দৃশ্যেই দেখা যায় কোন এক অভিনেতাকে অনেক উপর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হচ্ছে এবং নিচে পড়ে তার মৃত্যুও ঘটছে। এধরণের দৃশ্যে অভিনেতার পেছনে মোটা তার লাগানো থাকে, আর CGI-এর সাহায্যে খুব সহজেই তারটি মুছে ফেলা যায় এবং পতনটি বেশ দ্রুত হচ্ছে বলে দেখানো যায়।
চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বিপজ্জনক দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটি হল কারও গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া। এধরণের
দৃশ্য ধারনের সময় অভিনেতারা বেশ কয়েক প্রস্থ আগুন নিরোধক কাপড় পড়ে থাকেন। এসবেস্টস-এর নাম আমরা অনেকেই জানি, এটি এমন একটি পদার্থ যাতে আগুন ধরে না এবং উত্তপ্ত হয় না। অভিনেতারা আগুন লাগানোর দৃশ্য ধারণের সময় এই এসবেস্টসের আবরণ শরীরে জড়িয়ে তারপর অভিনয় করে থাকেন। চলিচ্চত্রের জনপ্রিয় দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটি হল গাড়ি নিয়ে ধাওয়া। ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস সিকুয়ালের ছবিগুলো এই ধাঁচের। এসব দৃশ্যে ব্যবহৃত গাড়িগুলো বিশেষভাবে তৈরি হয়। এদের গায়ে ক্যামেরা বসানোর জন্য জায়গা থাকে, অগ্নি-নির্বাপক প্রযুক্তি থাকে, এবং গাড়িকে হঠাৎ শূন্যে লাফ দেয়ানোর জন্য এর গিয়ারবক্স বিশেষভাবে তৈরি থাকে।
এ তো গেল সত্যিকার স্টান্টের কথা, CGI-এর সাহায্যে এখন টাকা খরচ করলেই যেকোনো দৃশ্য, যেকোনো স্থান স্টুডিওতেই তৈরি সম্ভব। 2012 চলচ্চিত্রে আমরা দেখতে পাই কীভাবে গোটা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই ছবির এসব দৃশ্যই কিন্তু স্টুডিওর ভেতরেই ধারণ করা। CGI ব্যবহার করে যেকোনো স্থানকে নিজের ইচ্ছামতো স্থানে পরিণত করা সম্ভব। CGI প্রযুক্তি মূলত অ্যানিমেশন তৈরিরই আরেকটি আধুনিক ধারা। কিন্তু এখানে অ্যানিমেশনগুলো এতটাই অত্যাধুনিক হয়ে থাকে যে এদের সত্যিকার ধারণকৃত দৃশ্য বলেই মনে হয়। ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস সিরিজের সপ্তম ছবিটির নির্মাণকালে গাড়ি দুর্ঘটনায় অভিনেতা পল ওয়াকারের মৃত্যু ঘটে। কিন্তু ছবিটির শুটিং তখনও বাকি। তখন পল ওয়াকারের ভাইকে এনে তাঁর জায়গায় অভিনয় করানো হয়, এবং CGI-এর সাহায্যে তাঁর চেহারা পল ওয়াকারের মত করে পর্দায় দেখানো হয়।
Top 10 Actors Who Do Their Own Stunts
হল
, চলচ্চিত্রে যেসব অদ্ভুত অদ্ভুত স্টান্ট দেখানো হয়, তার বেশিরভাগই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা। তারপরেও অনেক দৃশ্যই আছে যেগুলো সত্যি সত্যি জীবন বাজি রেখে করা হয়। কিন্তু বেশীরভাগ স্টান্টই নায়ক নিজে করে থাকেন না, এসব স্টান্ট দেখানোর জন্য থাকে স্টান্টম্যান, যারা পারদর্শী হন এধরণের ভয়ানক এবং বিপজ্জনক সাহসিকতা প্রদর্শনে। তারপরেও কিছু অভিনেতা আছেন যারা নিজেদের স্টান্ট নিজেরাই করতে পছন্দ করেন, যেমন হলিউডের টম ক্রুজ। মিশন ইম্পসিবল ৪-এ আমরা তাঁকে দেখি দুবাইয়ে অবস্থিত পৃথিবীর সর্বোচ্চ দালান বুর্জ খলিফার দেয়াল বেয়ে উঠতে। যদিও এধরণের কাজ করার সময় তাঁরা যথেষ্ট নিরাপত্তা বহন করেন, তবুও স্টান্ট করার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে এবং অভিনেতার প্রাণহানি ঘটার নজির পর্যন্ত আছে।
এখনকার সময়ের প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে যেকোনো ধরণের চিত্রই গ্রাফিক্সের মাধ্যমে তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু পূর্বের চলচ্চিত্রগুলোতে এত প্রযুক্তির ব্যবহার হত না, তাই বিপজ্জনক কাজগুলো অভিনেতাদের করতেই হত। তখন অবশ্য পেশাদার স্টান্টম্যানের চলন ছিল না, তাই পরিচালকরা সাহসী যে কাউকে এনে স্টান্ট করাতেন। সর্বপ্রথম যে দুজন ব্যক্তি পেশাদার স্টান্টম্যান হিসেবে হলিউডে কাজ শুরু করেন তাঁদের নাম ছিল বাস্টার কিটন এবং কিস্টোন কপস।
চলচ্চিত্রে স্টান্ট দেখাতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয় ৬০-এর দশকে। তখন শুন্য থেকে ঝাঁপিয়ে পড়া, বুলেটের গতি দেখানো এধরণের স্টান্টের চলন শুরু হয়। চলচ্চিত্রে আলোড়ন পড়ে যায় কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে। কম্পিউটারে সৃষ্ট ছবিতে পরিচালকরা ইচ্ছেমত চিত্র তৈরি করতে পারেন, একে বলা হয় CGI বা Computer Generated Imagery। বিভিন্ন মারামারির দৃশ্য, গাড়ি দুর্ঘটনা, বিস্ফোরণ, এধরণের শুটিং করতে CGI-এর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু CGI-এ যেকোনো চিত্র তৈরির খরচ অনেক বেশী পড়ে, আবার CGI-এর চেয়ে সত্যিকার ধারণকৃত চিত্রই দর্শক বেশী পছন্দ করে, তাই চলচ্চিত্র জগতে সবসময়ই পারদর্শী স্টান্টম্যানের চাহিদা সবচেয়ে বেশী।
ছায়াছবিতে যখন দেখা যায় নায়ক ভিলেনকে লাথি-ঘুসি মেরে মেরে কাহিল করে ফেলছে, আসলে কিন্তু
সত্যি সত্যি তারা মারামারি করে না। তারা একে অপরকে এমনভাবেই আঘাত করে যাতে কারও কোন চোট না লাগে। কিন্তু এসবই ক্যামেরার কারসাজি, যেখানে দেখানো হয় নায়কের ঘুসি খেয়ে ভিলেন ছিটকে গিয়ে পড়ে যাচ্ছে। আবার আমরা দেখি যে কেউ একজন গুলি খেলো আর তার শরীর থেকে রক্ত পড়াও শুরু হল, যেন সত্যি সত্যি গুলি লেগেছে। চলচ্চিত্রে কখনোই সতিকার গুলি ব্যবহার করা হয় না। পিস্তলগুলো খালি-ই থাকে, অথবা ফাঁকা গুলি ভরা থাকে। আর যে অভিনেতার গুলি খাবার কথা, তার শরীরের নির্দিষ্ট জায়গায় এক ব্যাগ নকল রক্ত আটকানো থাকে। কিন্তু সঠিক সময়ে ব্যাগটি ফাটবে কীভাবে? তার জন্য ব্যবহার করা হয় খুবই ছোট মানের এক ধরণের রিমোট কন্ট্রোল বিস্ফোরক। সঠিক সময়ে রিমোটের সাহায্যে ব্যাগটি ফাটিয়ে শরীর থেকে রক্ত বের করা হয়। চলচ্চিত্রে অনেক দৃশ্যেই দেখা যায় কোন এক অভিনেতাকে অনেক উপর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হচ্ছে এবং নিচে পড়ে তার মৃত্যুও ঘটছে। এধরণের দৃশ্যে অভিনেতার পেছনে মোটা তার লাগানো থাকে, আর CGI-এর সাহায্যে খুব সহজেই তারটি মুছে ফেলা যায় এবং পতনটি বেশ দ্রুত হচ্ছে বলে দেখানো যায়।
চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বিপজ্জনক দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটি হল কারও গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া। এধরণের
দৃশ্য ধারনের সময় অভিনেতারা বেশ কয়েক প্রস্থ আগুন নিরোধক কাপড় পড়ে থাকেন। এসবেস্টস-এর নাম আমরা অনেকেই জানি, এটি এমন একটি পদার্থ যাতে আগুন ধরে না এবং উত্তপ্ত হয় না। অভিনেতারা আগুন লাগানোর দৃশ্য ধারণের সময় এই এসবেস্টসের আবরণ শরীরে জড়িয়ে তারপর অভিনয় করে থাকেন। চলিচ্চত্রের জনপ্রিয় দৃশ্যগুলোর মধ্যে একটি হল গাড়ি নিয়ে ধাওয়া। ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস সিকুয়ালের ছবিগুলো এই ধাঁচের। এসব দৃশ্যে ব্যবহৃত গাড়িগুলো বিশেষভাবে তৈরি হয়। এদের গায়ে ক্যামেরা বসানোর জন্য জায়গা থাকে, অগ্নি-নির্বাপক প্রযুক্তি থাকে, এবং গাড়িকে হঠাৎ শূন্যে লাফ দেয়ানোর জন্য এর গিয়ারবক্স বিশেষভাবে তৈরি থাকে।
এ তো গেল সত্যিকার স্টান্টের কথা, CGI-এর সাহায্যে এখন টাকা খরচ করলেই যেকোনো দৃশ্য, যেকোনো স্থান স্টুডিওতেই তৈরি সম্ভব। 2012 চলচ্চিত্রে আমরা দেখতে পাই কীভাবে গোটা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই ছবির এসব দৃশ্যই কিন্তু স্টুডিওর ভেতরেই ধারণ করা। CGI ব্যবহার করে যেকোনো স্থানকে নিজের ইচ্ছামতো স্থানে পরিণত করা সম্ভব। CGI প্রযুক্তি মূলত অ্যানিমেশন তৈরিরই আরেকটি আধুনিক ধারা। কিন্তু এখানে অ্যানিমেশনগুলো এতটাই অত্যাধুনিক হয়ে থাকে যে এদের সত্যিকার ধারণকৃত দৃশ্য বলেই মনে হয়। ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস সিরিজের সপ্তম ছবিটির নির্মাণকালে গাড়ি দুর্ঘটনায় অভিনেতা পল ওয়াকারের মৃত্যু ঘটে। কিন্তু ছবিটির শুটিং তখনও বাকি। তখন পল ওয়াকারের ভাইকে এনে তাঁর জায়গায় অভিনয় করানো হয়, এবং CGI-এর সাহায্যে তাঁর চেহারা পল ওয়াকারের মত করে পর্দায় দেখানো হয়।
Top 10 Actors Who Do Their Own Stunts