শ্রদ্ধেয় চীন দেশ,
আমি জনৈক মুরগা। আমার অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা নিন। পৃথিবীর জন্ম থেকে আজ অবধি আপনাদের সৃষ্টিশীলতা সবাইকে মুগ্ধ করে চলেছে। চা, রেশমি কাপড় থেকে শুরু করে হালের চায়নিজ ফোন ও নানা ধরনের ইলেকট্রনিকস উদ্ভাবন জগৎবাসীকে বিস্মিত করছে!
গরিব-দুঃখী মানুষের কষ্ট আপনারা গভীরভাবে অনুভব করেন, বিশ্ববাজার সেটাই স্মরণ করিয়ে দেয়
আমাদের।
তবে এবারের উদ্ভাবন সবকিছু ছাড়িয়ে গেছে। উদ্ভাবনটি হলো মুরগির ডিম। মোরগ-মুরগির কোনো সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আপনারা বাজারে ছেড়েছেন মুরগির ডিম! আমরা কত কষ্ট করে ডিম পাড়ি, আর লোভী মানুষ আমাদের অনাগত সন্তানকে খাওয়ার জন্য জোর করে ধরে নিয়ে যায় এবং আমাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। আপনাদের এই মহৎ উদ্যোগ সফল হলে আমরা আমাদের সন্তানদের নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারব। ওরাও স্কুলে যাবে, খেলাধুলা করবে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার, জজ-ব্যারিস্টার হয়ে মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করবে!
আজকাল আবার অমুক চিকেন ফ্রাই, তমুক চিকেন তন্দুরির ছড়াছড়ি। এই রেসিপি, সেই রেসিপি। আমাদের মেরে নিষ্ঠুর মানুষেরা গ্রিল আর বারবিকিউও বানায়। তাই আমাদের চাহিদাও ঊর্ধ্বমুখী। আমরা বাসা থেকে ভয়ে বেরও হতে পারি না। কখন না জানি কোন দুষ্টুলোকের খপ্পরে পড়ে যাই। ছোট্ট একটা চাওয়া। আপনারা যদি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রে মোরগ-মুরগিও বাজারজাত করতে পারেন, তাহলে আমাদের জীবনটা বেঁচে যায়। আমরা হয়তো এর সুফল দেখে যেতে পারব না, কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম সুখী হবে ভেবে আমরা আনন্দে দুনিয়া ছাড়তে পারব। ভবিষ্যতে আপনারা ঘোড়ার ডিমও আবিষ্কার করতে পারবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
আজ আর নয়। নোবেল কমিটিকে এখনই পত্র লিখব, যাতে এ বছরই এমন মহৎ উদ্ভাবনের জন্য আপনাদের পুরস্কৃত করা হয়।
ইতি
সভাপতি
নিখিল বাংলা মোরগ-মুরগি বাঁচাও সমিতি