**************************************************************************************************************************************************** ****************************************************************************************************************************************************

জুয়েল আইচ এর একটি ছোট কিন্তু জোরালো ম্যাজিক ১০০% গ্যারান্টি



জুয়েল আইচদর্শকদের নিশ্চিতভাবে অবাক করে দেবে, এমন ম্যাজিক আবিষ্কার করা একটি কঠিন কাজ। ছোটবেলায় আমার কোনো জাদু-শিক্ষক ছিলেন না। পাইনি কোনো ম্যাজিক শেখার বই। তাই নিজের কল্পনার ওপর ভর করে জাদু আবিষ্কার করতে হতো। তবে নিজের কল্পনার মতো জাদুটি যখন দর্শককে চমকে দিত, তখন তা এক অনির্বচনীয় আনন্দের সম্পদ হয়ে হূদয়ে জমা হতো। দর্শকেরা সম্পূর্ণ নতুন জিনিস উপহার পেলেন বলে অনেক বেশি তারিফ করতেন। সুনাম খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ত। এমনই একটি মজার জাদু আজ তোমাদের শিখিয়ে দেব।


দর্শকদের সামনে যা করবে(ক) একটি ম্যাচবাক্স পকেট থেকে বের করো।

(খ)  ম্যাচকাঠির ড্রয়ার বা ট্রেটা আঙুল দিয়ে ঠেলে বের করো।
(গ)  ট্রে-ভর্তি ম্যাচকাঠিগুলো টেবিলের ওপর ঢেলে দাও।
(ঘ)  খালি ট্রেটা সবার সামনে ম্যাচবাক্সের মধ্যে ঢুকিয়ে দাও।
(ঙ)  হাতের আঙুলে একটা তুড়ি বা হাততালি দিয়ে ট্রেটা ঠেলে দেখাও, খালি ট্রেটা ম্যাচকাঠিতে ভরে গেছে। শুরুতে যে কাঠিগুলো টেবিলে ঢেলে রেখেছিলে, সেগুলো তখনো সেখানে পড়ে আছে।
(চ)  ভরা ম্যাচবাক্সটা বাঁ হাত ধরে ডান হাতে এমন একটা ভঙ্গি করো, যেন ম্যাজিকটা এখানেই শেষ।
(ছ)  দর্শকেরা ‘ওয়াও’ বা অন্য কোনো প্রশংসাসূচক শব্দ উপহার দিয়ে হাততালি দিলে তোমার ম্যাচবাক্সটি পকেটে রেখে দাও।
তোমার প্রস্তুতি
১ নম্বর ছবি ড্রয়ারের পিঠে আঠা দিয়ে লাগানো অর্ধেক কাঠির সারিএকটা সুন্দর ম্যাচবাক্স নাও। আজকাল ম্যাচবাক্সের উভয় পিঠে একই রকম প্রিন্ট পাওয়া যায়। কোনো এলাকায় যদি এমন বাক্স না পাওয়া যায়, তাহলে উভয় পিঠে একই রকম ছবি লাগিয়ে নিতে হবে। আর লম্বালম্বি একপ্রান্তে ছোট্ট একটা দাগ লাগিয়ে নেবে, যা শুধু তুমি ছাড়া আর কারও চোখে পড়বে না। তোমার বাক্স তৈরির কাজ হয়ে গেল।

এবারে ট্রে বা ড্রয়ার তৈরির কাজ। ড্রয়ারটি উপুড় করে রাখো। ১২-১৩টা ম্যাচকাঠি নাও। কাঠিগুলোর মাঝামাঝি কেটে ফেলো। বারুদের দিকটা রেখে নিচের অর্ধেক ফেলে দাও। বারুদসহ কাঠির অর্ধেকটা উপুড় করা ড্রয়ারের পিঠে পাশাপাশি সাদা গ্লু (আইকা বা ফেভিকল) দিয়ে লাগিয়ে নিতে হবে। লাগানোর কাজে বিশেষ যত্ন নিতে হবে, যেন সবকিছু শুকিয়ে গেলে ড্রয়ারটা যখন বাক্সের মধ্যে পুরে দেওয়া হবে, তখন তা সরসর করে ঢুকতে ও বের হতে পারে। এ জন্য কী করতে হবে? প্রতিটি অর্ধেক করে কাটা কাঠির কাটা দিকটা ব্লেড দিয়ে একদিকে ঢাল করে কাটতে হবে। বারুদের পাশটাও যতটুকু চোখে পড়ে, সেটুকু রেখে বাকিটা চেঁছে ফেলে দিতে হবে। ঢাল করা কাঠির পাতলা দিকটা বারুদ পর্যন্ত ড্রয়ারের সঙ্গে আঠা দিয়ে লাগিয়ে একটা শক্ত মলাটের বই চাপা দিয়ে পুরো জিনিসটা এক দিন ছায়ায় শুকিয়ে নাও। প্রথম দিকে বেশ কয়েকবার ট্রেটা ধীরে ধীরে বাক্সের মধ্যে ঢোকাও এবং বের করো। কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হলে জোরাজুরি কোরো না। সাবধানে ত্রুটিটি সেরে ফেলো। সব ঠিকমতো তৈরি হলে শুরু হবে তোমার অনুশীলন আর অনুশীলনের পালা। তুমি কী কথা বা গল্প বলে ম্যাজিকটি করবে, তার একটা স্ক্রিপ্ট লিখে নাও। আয়নার সামনে বসে পড়ো। প্রয়োজনে তোমার কথা, গল্প ও ম্যাচবাক্স চালনা পরিবর্তন করে একসময় চূড়ান্ত সুন্দর একটি জাদু তৈরি হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে যা করবে, তার নামই উপস্থাপনা। কৌশলযুক্ত ম্যাচবাক্সটি তোমার যন্ত্র। শুধু বাদ্যযন্ত্র দিয়ে যেমন মধুর সুর বের হয় না; শিল্পীকে মধুর করে বাজাতে শিখতে হয়। জাদুর ক্ষেত্রেও তেমনই।২ নম্বর ছবি সাধারণ ফাঁকা বাক্স। একপ্রান্তে কলমের একটা ডট

আমি এখন প্রদর্শন কৌশলটা শিখিয়ে দিচ্ছি। অনুশীলনের মাধ্যমে একে সুন্দরতর করার দায়িত্ব জাদুশিল্পী হিসেবে তোমার। আঠা দিয়ে পিঠে সেঁটে দেওয়া কাঠিসহ ড্রয়ারটা চিত করো। ফাঁকা ড্রয়ারে লুজ করে কিছু স্বাভাবিক কাঠি রাখো। বাক্সের যেদিকে ডট দেওয়া, সেদিকটা ঘুরিয়ে তলের দিকে নাও। এবার ড্রয়ারটা বাক্সের ভেতরে ঢুকিয়ে দাও। তাহলে কী হলো? ড্রয়ারের খোলের মধ্যে লুজ কিছু কাঠি। ম্যাচবাক্সটি পকেট থেকে বের করো। ড্রয়ারের যেদিকে আঠা দিয়ে কাঠি লাগানো নেই, সেদিকে অর্ধেকের সামান্য কম বের করে উপুড় করে ঝাঁকি দিলে লুজ কাঠিগুলো টেবিলে পড়ে যাবে। দর্শকও দেখবেন একটা সাধারণ ম্যাচবাক্স এবং তার ড্রয়ারের উভয় দিক।

৩ নম্বর ছবি ডট দাগ দেওয়া প্রান্তে আঠা দিয়ে লাগানো কাঠির দিকটা দেখে মনে হচ্ছে বাক্সভরা কাঠিএবার বাক্সের বিষয়ে কোনো কথা না বলে ড্রয়ারটা বাক্সের ভেতরে পুরে দিয়েই বাক্সটা সামান্য ওপরে ছুড়ে দুই হাতে ধরে নাও। দর্শকেরা যেন বুঝতে না পারেন তুমি ডট দেওয়া দিকটা ঘুরিয়ে একটু আগের সাধারণ দিকটার দিকে কাঠি লাগানো ট্রের দিকটা নিয়ে এসেছ। এবার একটা তুড়ি দাও। যেন এই মুহূর্তেই তুমি ম্যাজিকটা করে ফেললে। ডটের উল্টো দিক থেকে তর্জনী ঢুকিয়ে এক ঠেলায় মাপা প্রায় অর্ধেকটা ট্রে বের করে ফেলো। বারবার অনুশীলন এ কাজে তোমাকে সাহায্য করবে। ট্রের পিঠে লাগানো কাঠি দেখে দর্শকেরা ভাববেন, এক তুড়িতে ম্যাচবাক্স কাঠিতে ঠেসে ভরে গেছে।

ম্যাজিক শেষ হয়ে যাওয়ার ভঙ্গি করো। তুমি যত বিশ্বাসযোগ্যভাবে ম্যাজিকটি করতে পারবে, দর্শক তত জোরে বাহবা দেবেন। এক চাপে ভরা (?) ম্যাচের ট্রেটি বাক্সের মধ্যে ঢুকিয়ে পকেটে রেখে দাও। ম্যাজিকটি শেষ হয়ে গেল। কিন্তু দর্শকের বিস্ময় আর মুগ্ধতার সুরটি অনেকক্ষণ ধরে মুখে মুখে বাজতে থাকল।

ঘটনার সুত্রপাত ঘটেছে প্রথোম আলো

No comments:

Post a Comment