কিয়ামত হযরত ইসরাফীল আ. এর সিঙ্গার সেই ভয়ংকর
ফুৎকারের নাম যার ফলে পুরো পৃথিবী প্রকম্পিত হবে।
কম্পনের মাত্রা ও ফুৎকারের আওয়াজ উত্তরোউত্তর
বাড়তেই থাকবে এত বিকট হবে যে, যার ফলে সমস্ত
প্রানী প্রাণ হারাবে। যমীন ফেটে যাবে। পাহাড়-
পর্বত উড়তে থাকবে ধূনিত তুলার মত। গ্রহ নক্ষত্র
পড়ে যাবে টুকরো টুকরো হয়ে। সৃর্য আলোহীন
হয়ে যাবে। আকাশ ভেঙ্গে পড়বে। সমুদ্র উত্তাল হবে।
স্তন্য দানকারী ভুলে যাবে তার দুধের শিশুকে।
গর্ভবতী গভপাত করে দিবে।
মানুষকে মনে হবে মাতাল। আসলে তারা মাতাল নয়। এই
বিভিষিকাময় অবস্থার বিবরন সকল নবীই স্বীয়
উম্মতকে দিয়েছেন। কিন্তু মহানবী সা. এসে বলেছেন
কিয়ামত অত্যাসন্ন। আমি এই পৃথিবীর শেষ রাসুল।
তবে কিয়ামত কখন সংঘঠিত হবে তার সঠিক তারিখ
আল্লাহ ব্যাতিত কেউ জানেনা। অবশ্য কিয়ামতের কিছু
কিছু আলামত পূর্ববর্তী নবীগনও স্বীয়
উম্মাতকে বলেগেছেন। তবে আমাদের নবীর পর যেহেতু
কোন নবী আসবে না তাই তিনি কিয়ামতের বিবরন
দিয়েছেন স্ব-বিস্তারে। যেন মানুষ আখেরাতের
প্রস্তুতি নিতে পারে। কিয়ামতের কিছু কিছু আলামতের
বিবরন এমন বিস্তারিত পাওয়া যায় যে, অতি ক্ষুদ্র,
ক্ষুদ্র বিষয়ও চিহ্নিত করা হয়েছে।
যেমন দাজ্জাল ও ঈসা এর যামানার এত বিস্তারিত
বিবরন পাওয়া যায় যে, অন্য কোন আলামতে এর নজীর
পাওয়া যায় না। আবার কিছু কিছু আলামতের বিবরন এত
সংক্ষিপ্ত যে, উহার উদ্দেশ্য
নিশ্চিতভাবে জানা যায়না। অনেক আলামতের
তারতীবই বুঝা যায় না। আবার যে সমস্ত ঘটনার
তারতীব হাদিসেই বর্নিত হয়েছে সেগুলোতেও অনেক
স্থানেই এ কথা বুঝা যায় না যে, দুই ঘটনার মাঝে কত
কালের ব্যবধান। তাই পাঠক অনেক সময় পড়ে যায়
দ্বিধা দন্ধে। তাই আমরা নিচে কিয়ামতের আলামত
গুলোর একটি ইজমালী ধারাবাহিক সূচি পেশ করছি।
কিয়ামতের আলামতগুলো তিনভাগে বিভক্ত। যথা-১.
দূরবর্তী আলামত, ২. মধ্যবর্তী আলামত।
যেগুলোকে আলামতে ছুগরা নামেও অবহিত করা হয়। ৩.
নিকটবর্তী আলামত। যেগুলোকে আলামতে কুবরাও
বলা হয়।
দূরবর্তী আলামত : দূরবর্তী আলামত
সেগুলোকে বলে যেগুলোর প্রকাশ বহুকাল পূর্বেই
হয়েগেছে। যেমন: ১ রাসুলুল্লাহ সা. আগমন। ২. চন্দ্র
বিদীর্ণ হওয়ার ঘটনা। ৩. রাসুলুল্লাহর সা. ওফাত। ৪.
জঙ্গে সিফ্ফীন। এ ব্যাপারে রাসুল সা. বলেন, কিয়ামত
কায়েম হবেনা যতক্ষন পর্যন্ত বড় দুইটি দল এক
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়বে। তাদের উভয় দলের
দাবী হবে এক ও অভিন্ন। [বুখারি: ২/১০৫৪; মুসলিম:
২/৩৯০; ফাতইলবারী;১৩/৭২] ৫. তাতারীদের ফিৎনা।
যার বিবরন সহিহ বুখারির বর্ননায় এসেছে এভাবে-
আবুহুরায়রা রা. বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যতক্ষন
না তোমরা তুর্কীদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করবে। যারা ছোট
ছোট চক্ষু, লাল চেহারা, চেপ্টা নাক বিশিষ্ট, তাদের
মুখমন্ডল হবে পরতে পরতে ভাজ, চামড়ার ঢালের
ন্যায়। এবং যতক্ষন না তোমরা পশমের জুতা পরিধান
কারী এক জাতীর সাথে যুদ্ধ করবে। [বুখারি; মুসলিম]
৬. হেজাজের আগুন। আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, ততদিন কিয়ামত কায়েম হবে না যতদিন
হেজাজ থেকে একটি আগুন বের হয়ে বসরায় অবস্থানরত
উটের গর্দান আলোকিত না করে অর্থাৎ বসরা পর্যন্ত
না পৌছে। মহা নবীর এ ভবিষ্যৎ
বানী অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলিত হয়েছে।
তাতারী ফিৎনার এক বছর পূর্বে ৬৫৪ হিজরীর ৬
জুমাদাল উখরা শ্রক্রবারে মদীনাতে এ আগুন প্রকাশ
পায়। তিন মাস পর্যন্ত একাধারে চলতে থাকে বিস্তর
এক এরিয়া জোড়ে। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী বসরার মত
দুর শহর পর্যন্ত এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পাহাড় সহ
যা কিছু এ আগুনের কবলে পড়েছে তাই জলে ভষ্মে পরিনত
হয়েছে। আল্লামা নববী, কুরতুবী, আবু শাম্মাহর মত বড়
বড় মহাদ্দিস এই ঘটনাকে উক্ত হাদিসের মেছদাক
সাব্যস্থ করেছেন।
২. মধ্যবর্তী আলামত : মধ্যবর্তী আলামত
সেগুলো যা প্রকাশ পেয়েছে তবে এখানো শেষ হয়নি।
আলামতে কুবরা প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রকাশ
পেতেই থাকবে। দ্বিতীয় প্রকারের আলামতের
তালিকাও দীর্ঘ।
১. দীনের উপর অটল থাকা হাতে জলন্ত অঙ্গার রাখার
ন্যয় কষ্টকর হবে। ২. ইতরশ্রেনীর লোকেরাই [যার
বাবাও ইতর ছিল] দুনিয়াতে ভাগ্যবান হবে। ৩. গোত্র
ও জাতীয় লিডার হবে মুনাফিক, ফাসিক ও নিচু শ্রেনীর
লোক। পুলিশ অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে। যারা জালিমের
হাতকে শক্তিশালী করবে। যেমন তাবরানী শরিফের এক
বনর্নায় এসেছে, ‘কিয়ামতের একটি আলামত
হলো পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে’। ৫. অযোগ্যরা বড়
বড় পদ পদবীর অধিকারী হবে। ৬. ওজনে কম দেয়া হবে।
৭. লেখা লেখির প্রচলন বেড়ে যাবে ব্যাপক হারে ।
তবে তা হবে দুনিয়ার উদ্দেশ্যে। ৮.
কুরআনকে বানানো হবে গান বাদ্যের মাধ্যম। ৯.
আমানতদারকে বলা হবে খিয়ানতকারী আর
খিয়ানতকারীকে বলা হবে আামানতদার। ১০. ভাল
ব্যবহার করা হবে অনাত্মীয়ের সাথে আর আত্মীয় ও
কাছের লোকদের সাথে করা হবে অসৎ ব্যবহার
এবং নষ্ট করা হবে তাদের প্রাপ্য অধিকার। ১১. মা-
বাবার সাথে করবে নাফরমানী আর অনুসরন
করবে স্ত্রীর। ১২. ব্যপক হারে বিবাহ বিচ্ছেদের
ঘটনা গঠবে। ১৩. রিয়া ও গৌরবের
বশবর্তী হয়ে প্রতিযোগিতা মূলক বড় বড়
অট্রালিকা নির্মান করবে। ১৪. শরাবের নাম নবীয,
কমল পানীয়, সুদের নাম ক্রয় বিক্রয়, মুনাফা, ঘুষের
নাম হাদিয়া, উপটোকন ইত্যাদি রেখে এগুলোকে হালাল
মনে করা হবে। ১৫. জারজ সন্তান বৃদ্ধি পাবে। ১৬.
দাওয়াতে খাবার ব্যতিত নারীদেরকেও
উপস্থাপনা করা হবে। ১৭. হঠাৎ মৃত্যুর
সংখ্যা বেড়ে যাবে। ১৮. নারীরা কাপড় পরবে। কিন্তু
পাতলা ও অতি আট-সাঁট হওয়ার দরুন মনে হবে উলঙ্গ।
১৯. নারীরা মাথাকে বুখতী উটের কুঁজের ন্যয়
করে হেলে দুলে চলবে। ২০. মুমিনগন তাদের নিকট
বাদীর চেয়েরও নিকৃষ্ট হবে।
রাসুলুল্লাহ সা. এ গুলোর সংবাদ এমন সময় দিয়েছিলেন
যখন এগুলোর কল্পনাও অসম্ভব ছিল। কিন্ত আজকের
পৃথিবীতে এ সকল ঘটনা দিবা রাত্রিতে আমরা প্রত্যক্ষ
করছি। কোন কোন আলামত তো শেষ সীমায়
পৌছেছে আবার কোনটির সূচনা হয়েছে সবেমাত্র। যখন
সবগুলো আলামত প্রতিফলিত হবে তখনই কিয়ামতের
আলামতে কুবরা [বড় বড় আলামত] ও নিকট বর্তী আলামত
গুলো প্রকাশিত হতে থাকবে।
নিকটবর্তী আলামত : এই আলামতগুলো কিয়ামতের
একেবারে নিকটবর্তী সময়ে একেরপর এক প্রকাশিত
হতে থাকবে। এগুলো হবে বিশ্ব কাপানো,
পিলে চমকানো ঘটনা। যেমন ইমাম মাহদীর
আত্মপ্রকাশ, দাজ্জালের আবিভার্ব, ঈসার আ. অবতরন,
ইয়াজুজ মাজুজের বের হওয়া। পশ্চিম প্রান্ত
থেকে সৃর্যোদয়, দাব্বাতুল আরদ্্, ইয়ামানের অগ্নি,
তিন স্থানে ভূমি ধস ইত্যাদি। যখন এজাতীয় সকল
আলামত প্রকাশিত হয়ে যাবে, তখন কোন এক সময়
[শুক্রবার] অকস্মাৎ কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।
কালের বিচারে কিয়ামতের আলামত : কিয়ামতের
পূর্বে এমন বড় বড় ও সাংঘাতিক ঘটনা ঘটবে,
যেগুলো সম্পর্কে একে অপরকে জিজ্ঞাসা করবে, এসব
ব্যপারে তোমাদের নবী কিছু বলে গেছেন কি? ২.
তিনজন বড় বড় মিথ্যুকের প্রকাশ ঘটবে। সর্বশেষ
মিথ্যুকের নাম হবে দাজ্জাল। ৩. ঈসার আ. আগমন
পর্যন্ত এই উম্মতের একদল লোক হকের পক্ষে যুদ্ধ
জিহাদ করে যাবে। ৪. এই জামাতের সর্বশেষ আমীর
হবেন ইমাম মাহদী। ৫. তার যামানাতেই ঈসার আ.
আগমন ঘটবে। ৬. আল্লাহর পছন্দনীয় মুসলমানের এক
সৈন্যদল হিন্দুস্থানে জিহাদ করবে এবং হিন্দুস্তান
বিজয় করবে। এ যাবত হিন্দুস্থানে অনেকবার যুদ্ধ
হয়েছে। আল্লাহই ভাল জানেন এখানে কোন যুদ্ধ
উদ্দেশ্য। তবে অগ্রগণ্য মত হলো, সেই যুদ্ধ
এখনো সংঘটিত হয়নি। ভবিষ্যতে হবে। ৭. ইমাম
মাহদীর নেতৃত্বে কুস্তন্তনিয়া বিজয় হবে। ৮.
দাজ্জালের অবিভার্ব। ৯. ঈসা আ. এর অবতরন। তখন
মুসলমানদের আমীর হবে ইমাম মাহদী। ১০. দাজ্জালের
সাথে যুদ্ধ। ১১. দাজ্জাল বধ করে মুসলমানদের বিজয়।
১২. মসুলমানগন ইহুদীদের বেছে বেছে হত্যা করবে।
১৩. ঈসা আ. ও মুসলমানগন সম্মেলিত ভাবে শুকর
হত্যা করবে এবং ক্রশ ভেঙ্গে ফেলবে। ১৪. মানুষ সুখ
শান্তি ও নিরাপদে জীবনযাপন করতে থাকবে। এ
অবস্থায় ইয়াজুজ মাজুজের প্রাচির ভেঙ্গে যাবে। ১৫.
ইয়াজুজ মাজুজ বের হয়ে পড়বে। ১৬. আল্লাহর
নির্দেশে ঈসা আ. মুসলমানদের নিয়ে তুর পর্বতে আশ্রয়
নিবেন। কেননা তাদের মুকাবেলা করার
শক্তি কারো থাকবে না। ১৭. ঈসার আ. বদ দুআর
ফলে ইয়াজুজ মাজুজ ধ্বংস হয়ে যাবে। ১৮. ঈসার আ.
বরকতে পৃথিবী ব্যাপী আদল ইনসাদ কায়েম হবে।
শান্তি নিরাপত্তার চাদরে পৃথিবী ঢেকে যাবে। ১৯.
ঈসা আ. বিবাহ করবেন। সন্তান হবে। বিবাহের পর
তিনি পৃথিবীতে ১৯ বছর থাকবেন। সর্বমোট থাকবেন
৪০ বছর। ২০. ঈসার আ. ওফাত হবে । ২১. মুসলমান
জানাযা পড়ে তাকে দাফন করবে। ২২. মানুষ ঈসার আ.
ওসিয়ত মুতাবেক তামীম গূত্রের মুকআাদ নামক এক
ব্যাক্তিকে খলীফা নিবার্চন করবে। ২৩. মুকআদ
ইনতিকাল করবেন। ২৪. পৃথিবীর তিন
স্থানে ভূমি ধসে যাবে ১. প্রাচ্্েয ২. পাশ্চাত্যে। ৩.
জাযিরাতুল আরবে/আরব উপদ্বীপে। ২৫.
একটি ধূয়া প্রকাশিত হবে যা মানুষকে আছন্ন
করে নিবে। মুমিনের সর্দির মত ভাব হবে। আর
কাফেররা বেহুশ হয়ে যাবে। ৪০ দিন পর এ
ধোয়া পরিষ্কার হয়ে যাবে। ২৬. পশ্চিম দিক
থেকে সুর্য উদিত হবে। এরপর আর তাওবা কবুল হবে না।
সুর্য মধ্য আকাশ পর্যন্ত এসে আল্লাহর হুকুমে আবার
পশ্চিম দিকে গিয়েই অস্ত যাবে। তারপর
যথানিয়মে সৃর্যের উদয়-অস্ত হবে। ২৭. দাব্বাতুল আরদ
[ভূমির জš] এটি সাফা পাহাড় ফেটে বের হবে।
তা হবে অদ্ভুত আশৃতির। এ প্রাণীটি মানুষের
সাথে কথা বলবে। অতি দ্রুতবেগে পুরো পৃথিবী ভ্রমন
করে মুমিনের কপালে নূরানী রেখা টেনে দিবে। আর
সীল মেরে দিবে কাফেরের নাকে বা গর্দানে। ২৮.
ইয়ামানের অগ্নি। ইয়ামানের আদন নামক শহর
থেকে একটি অগ্নি বের হয়ে লোক দিগকে সমবেত
হওয়ার স্থান সিরিয়ার দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে তথায়
সমবেত করবে। ২৯. একটি আরমদায়ক বাতাস প্রবাহিত
হবে। যা সমস্ত মুমিন বান্দার প্রাণ হরণ করবে।
দুনিয়ায় কোন মুমিন অবশিষ্ট থাকবেনা। ৩০. এরপর
দুনিয়াতে থাকবে শুধু নিকৃষ্টলোকেরা।
তারা সর্বপ্রকার নিকৃষ্ট কাজে লিপ্ত হবে। হিংস্র
পশুর মত খুনা-খুনীতে লিপ্ত হবে। মূর্তি পুজা করবে।
মঙ্গল অমঙ্গল ও কল্যাণ অকল্যাণের পার্থক্য
ভুলে যাবে। গাধার ন্যয় প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত
হবে। সমগ্র পৃথিবীতে হাবশী কাফেরদের রাজত্ব
চলবে। তারা বায়তুল্লাহকে শহীদ কবে দিবে। এ
অবস্থায় হঠাৎ একদিন সিঙ্গায় ফুঁক
দেয়া হবে এবং কিয়ামত সংঘঠিত হবে। সিঙ্গার
আওয়াজ প্রথমে হালকা ও সহনীয় হবে। পরে এত কঠোর ও
ভীষন হবে যে, আওয়াজের প্রচন্ডতায় সকল
প্রানী মারা যাবে। পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের
রুহও বেহুশ হয়ে যাবে। এ
মহাপ্রলয়ে পুরো পৃথিবী ধ্বংশ হয়ে যাবে। কিয়ামত
কি অবস্তায় সংঘটিত হবে বূখারী ও মুসলিমের বর্ণনায়
এর বিবরন এভাবে এসছে যে রাসুলল্লাহ সা. বলেন,
অবশ্যই কিয়ামত সংঘটিত হবে এ অবস্থায় যে, দুই
ব্যক্তি বেচা কেনার জন্য কাপড় খুলে রাখবে,
এখনো মূল্য নিরুপন এবং কাপড় ভাজ
করা হয়নি যে কিয়ামত কায়েম হয়ে যাবে। তিনি আবার
বলেন, বরং কিয়ামত এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠিত হবে, এক
ব্যক্তি উটের দুধ দোহন করতে থাকবে এবং পান করারও
অবকাশ পাবেনা যে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, নিশ্চয় কিয়ামত এ অবস্থায়
প্রতিষ্ঠিত হবে যে, এক ব্যক্তি নিজের পানির হাউজ
লেপন করতে থাকবে, কিন্তু তাতে চতুষ্পদ
প্রানিকে পানি পান করাবারও সুযোগ পাবে না ।
আরো বলেন, নিশ্চয় এক ব্যক্তি মুখে লুকমা উঠাবে কিন্তু
তা খাবার আগেই কিয়ামত কায়েম হয়ে যাবে । এই
হাদিসের মর্ম কথা হল যে, আজকাল মানুষ যেভাবে কাজ
কর্মে ব্যস্ত থাকে, তেমনি কিয়ামতের দিনও মানুষ
কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকবে, এমতাবস্তায় হঠাৎ কিয়ামত
সংঘঠিত হয়ে যাবে।
ফুৎকারের নাম যার ফলে পুরো পৃথিবী প্রকম্পিত হবে।
কম্পনের মাত্রা ও ফুৎকারের আওয়াজ উত্তরোউত্তর
বাড়তেই থাকবে এত বিকট হবে যে, যার ফলে সমস্ত
প্রানী প্রাণ হারাবে। যমীন ফেটে যাবে। পাহাড়-
পর্বত উড়তে থাকবে ধূনিত তুলার মত। গ্রহ নক্ষত্র
পড়ে যাবে টুকরো টুকরো হয়ে। সৃর্য আলোহীন
হয়ে যাবে। আকাশ ভেঙ্গে পড়বে। সমুদ্র উত্তাল হবে।
স্তন্য দানকারী ভুলে যাবে তার দুধের শিশুকে।
গর্ভবতী গভপাত করে দিবে।
মানুষকে মনে হবে মাতাল। আসলে তারা মাতাল নয়। এই
বিভিষিকাময় অবস্থার বিবরন সকল নবীই স্বীয়
উম্মতকে দিয়েছেন। কিন্তু মহানবী সা. এসে বলেছেন
কিয়ামত অত্যাসন্ন। আমি এই পৃথিবীর শেষ রাসুল।
তবে কিয়ামত কখন সংঘঠিত হবে তার সঠিক তারিখ
আল্লাহ ব্যাতিত কেউ জানেনা। অবশ্য কিয়ামতের কিছু
কিছু আলামত পূর্ববর্তী নবীগনও স্বীয়
উম্মাতকে বলেগেছেন। তবে আমাদের নবীর পর যেহেতু
কোন নবী আসবে না তাই তিনি কিয়ামতের বিবরন
দিয়েছেন স্ব-বিস্তারে। যেন মানুষ আখেরাতের
প্রস্তুতি নিতে পারে। কিয়ামতের কিছু কিছু আলামতের
বিবরন এমন বিস্তারিত পাওয়া যায় যে, অতি ক্ষুদ্র,
ক্ষুদ্র বিষয়ও চিহ্নিত করা হয়েছে।
যেমন দাজ্জাল ও ঈসা এর যামানার এত বিস্তারিত
বিবরন পাওয়া যায় যে, অন্য কোন আলামতে এর নজীর
পাওয়া যায় না। আবার কিছু কিছু আলামতের বিবরন এত
সংক্ষিপ্ত যে, উহার উদ্দেশ্য
নিশ্চিতভাবে জানা যায়না। অনেক আলামতের
তারতীবই বুঝা যায় না। আবার যে সমস্ত ঘটনার
তারতীব হাদিসেই বর্নিত হয়েছে সেগুলোতেও অনেক
স্থানেই এ কথা বুঝা যায় না যে, দুই ঘটনার মাঝে কত
কালের ব্যবধান। তাই পাঠক অনেক সময় পড়ে যায়
দ্বিধা দন্ধে। তাই আমরা নিচে কিয়ামতের আলামত
গুলোর একটি ইজমালী ধারাবাহিক সূচি পেশ করছি।
কিয়ামতের আলামতগুলো তিনভাগে বিভক্ত। যথা-১.
দূরবর্তী আলামত, ২. মধ্যবর্তী আলামত।
যেগুলোকে আলামতে ছুগরা নামেও অবহিত করা হয়। ৩.
নিকটবর্তী আলামত। যেগুলোকে আলামতে কুবরাও
বলা হয়।
দূরবর্তী আলামত : দূরবর্তী আলামত
সেগুলোকে বলে যেগুলোর প্রকাশ বহুকাল পূর্বেই
হয়েগেছে। যেমন: ১ রাসুলুল্লাহ সা. আগমন। ২. চন্দ্র
বিদীর্ণ হওয়ার ঘটনা। ৩. রাসুলুল্লাহর সা. ওফাত। ৪.
জঙ্গে সিফ্ফীন। এ ব্যাপারে রাসুল সা. বলেন, কিয়ামত
কায়েম হবেনা যতক্ষন পর্যন্ত বড় দুইটি দল এক
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়বে। তাদের উভয় দলের
দাবী হবে এক ও অভিন্ন। [বুখারি: ২/১০৫৪; মুসলিম:
২/৩৯০; ফাতইলবারী;১৩/৭২] ৫. তাতারীদের ফিৎনা।
যার বিবরন সহিহ বুখারির বর্ননায় এসেছে এভাবে-
আবুহুরায়রা রা. বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবেনা যতক্ষন
না তোমরা তুর্কীদের বিরূদ্ধে যুদ্ধ করবে। যারা ছোট
ছোট চক্ষু, লাল চেহারা, চেপ্টা নাক বিশিষ্ট, তাদের
মুখমন্ডল হবে পরতে পরতে ভাজ, চামড়ার ঢালের
ন্যায়। এবং যতক্ষন না তোমরা পশমের জুতা পরিধান
কারী এক জাতীর সাথে যুদ্ধ করবে। [বুখারি; মুসলিম]
৬. হেজাজের আগুন। আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, ততদিন কিয়ামত কায়েম হবে না যতদিন
হেজাজ থেকে একটি আগুন বের হয়ে বসরায় অবস্থানরত
উটের গর্দান আলোকিত না করে অর্থাৎ বসরা পর্যন্ত
না পৌছে। মহা নবীর এ ভবিষ্যৎ
বানী অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলিত হয়েছে।
তাতারী ফিৎনার এক বছর পূর্বে ৬৫৪ হিজরীর ৬
জুমাদাল উখরা শ্রক্রবারে মদীনাতে এ আগুন প্রকাশ
পায়। তিন মাস পর্যন্ত একাধারে চলতে থাকে বিস্তর
এক এরিয়া জোড়ে। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী বসরার মত
দুর শহর পর্যন্ত এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পাহাড় সহ
যা কিছু এ আগুনের কবলে পড়েছে তাই জলে ভষ্মে পরিনত
হয়েছে। আল্লামা নববী, কুরতুবী, আবু শাম্মাহর মত বড়
বড় মহাদ্দিস এই ঘটনাকে উক্ত হাদিসের মেছদাক
সাব্যস্থ করেছেন।
২. মধ্যবর্তী আলামত : মধ্যবর্তী আলামত
সেগুলো যা প্রকাশ পেয়েছে তবে এখানো শেষ হয়নি।
আলামতে কুবরা প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রকাশ
পেতেই থাকবে। দ্বিতীয় প্রকারের আলামতের
তালিকাও দীর্ঘ।
১. দীনের উপর অটল থাকা হাতে জলন্ত অঙ্গার রাখার
ন্যয় কষ্টকর হবে। ২. ইতরশ্রেনীর লোকেরাই [যার
বাবাও ইতর ছিল] দুনিয়াতে ভাগ্যবান হবে। ৩. গোত্র
ও জাতীয় লিডার হবে মুনাফিক, ফাসিক ও নিচু শ্রেনীর
লোক। পুলিশ অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে। যারা জালিমের
হাতকে শক্তিশালী করবে। যেমন তাবরানী শরিফের এক
বনর্নায় এসেছে, ‘কিয়ামতের একটি আলামত
হলো পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে’। ৫. অযোগ্যরা বড়
বড় পদ পদবীর অধিকারী হবে। ৬. ওজনে কম দেয়া হবে।
৭. লেখা লেখির প্রচলন বেড়ে যাবে ব্যাপক হারে ।
তবে তা হবে দুনিয়ার উদ্দেশ্যে। ৮.
কুরআনকে বানানো হবে গান বাদ্যের মাধ্যম। ৯.
আমানতদারকে বলা হবে খিয়ানতকারী আর
খিয়ানতকারীকে বলা হবে আামানতদার। ১০. ভাল
ব্যবহার করা হবে অনাত্মীয়ের সাথে আর আত্মীয় ও
কাছের লোকদের সাথে করা হবে অসৎ ব্যবহার
এবং নষ্ট করা হবে তাদের প্রাপ্য অধিকার। ১১. মা-
বাবার সাথে করবে নাফরমানী আর অনুসরন
করবে স্ত্রীর। ১২. ব্যপক হারে বিবাহ বিচ্ছেদের
ঘটনা গঠবে। ১৩. রিয়া ও গৌরবের
বশবর্তী হয়ে প্রতিযোগিতা মূলক বড় বড়
অট্রালিকা নির্মান করবে। ১৪. শরাবের নাম নবীয,
কমল পানীয়, সুদের নাম ক্রয় বিক্রয়, মুনাফা, ঘুষের
নাম হাদিয়া, উপটোকন ইত্যাদি রেখে এগুলোকে হালাল
মনে করা হবে। ১৫. জারজ সন্তান বৃদ্ধি পাবে। ১৬.
দাওয়াতে খাবার ব্যতিত নারীদেরকেও
উপস্থাপনা করা হবে। ১৭. হঠাৎ মৃত্যুর
সংখ্যা বেড়ে যাবে। ১৮. নারীরা কাপড় পরবে। কিন্তু
পাতলা ও অতি আট-সাঁট হওয়ার দরুন মনে হবে উলঙ্গ।
১৯. নারীরা মাথাকে বুখতী উটের কুঁজের ন্যয়
করে হেলে দুলে চলবে। ২০. মুমিনগন তাদের নিকট
বাদীর চেয়েরও নিকৃষ্ট হবে।
রাসুলুল্লাহ সা. এ গুলোর সংবাদ এমন সময় দিয়েছিলেন
যখন এগুলোর কল্পনাও অসম্ভব ছিল। কিন্ত আজকের
পৃথিবীতে এ সকল ঘটনা দিবা রাত্রিতে আমরা প্রত্যক্ষ
করছি। কোন কোন আলামত তো শেষ সীমায়
পৌছেছে আবার কোনটির সূচনা হয়েছে সবেমাত্র। যখন
সবগুলো আলামত প্রতিফলিত হবে তখনই কিয়ামতের
আলামতে কুবরা [বড় বড় আলামত] ও নিকট বর্তী আলামত
গুলো প্রকাশিত হতে থাকবে।
নিকটবর্তী আলামত : এই আলামতগুলো কিয়ামতের
একেবারে নিকটবর্তী সময়ে একেরপর এক প্রকাশিত
হতে থাকবে। এগুলো হবে বিশ্ব কাপানো,
পিলে চমকানো ঘটনা। যেমন ইমাম মাহদীর
আত্মপ্রকাশ, দাজ্জালের আবিভার্ব, ঈসার আ. অবতরন,
ইয়াজুজ মাজুজের বের হওয়া। পশ্চিম প্রান্ত
থেকে সৃর্যোদয়, দাব্বাতুল আরদ্্, ইয়ামানের অগ্নি,
তিন স্থানে ভূমি ধস ইত্যাদি। যখন এজাতীয় সকল
আলামত প্রকাশিত হয়ে যাবে, তখন কোন এক সময়
[শুক্রবার] অকস্মাৎ কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।
কালের বিচারে কিয়ামতের আলামত : কিয়ামতের
পূর্বে এমন বড় বড় ও সাংঘাতিক ঘটনা ঘটবে,
যেগুলো সম্পর্কে একে অপরকে জিজ্ঞাসা করবে, এসব
ব্যপারে তোমাদের নবী কিছু বলে গেছেন কি? ২.
তিনজন বড় বড় মিথ্যুকের প্রকাশ ঘটবে। সর্বশেষ
মিথ্যুকের নাম হবে দাজ্জাল। ৩. ঈসার আ. আগমন
পর্যন্ত এই উম্মতের একদল লোক হকের পক্ষে যুদ্ধ
জিহাদ করে যাবে। ৪. এই জামাতের সর্বশেষ আমীর
হবেন ইমাম মাহদী। ৫. তার যামানাতেই ঈসার আ.
আগমন ঘটবে। ৬. আল্লাহর পছন্দনীয় মুসলমানের এক
সৈন্যদল হিন্দুস্থানে জিহাদ করবে এবং হিন্দুস্তান
বিজয় করবে। এ যাবত হিন্দুস্থানে অনেকবার যুদ্ধ
হয়েছে। আল্লাহই ভাল জানেন এখানে কোন যুদ্ধ
উদ্দেশ্য। তবে অগ্রগণ্য মত হলো, সেই যুদ্ধ
এখনো সংঘটিত হয়নি। ভবিষ্যতে হবে। ৭. ইমাম
মাহদীর নেতৃত্বে কুস্তন্তনিয়া বিজয় হবে। ৮.
দাজ্জালের অবিভার্ব। ৯. ঈসা আ. এর অবতরন। তখন
মুসলমানদের আমীর হবে ইমাম মাহদী। ১০. দাজ্জালের
সাথে যুদ্ধ। ১১. দাজ্জাল বধ করে মুসলমানদের বিজয়।
১২. মসুলমানগন ইহুদীদের বেছে বেছে হত্যা করবে।
১৩. ঈসা আ. ও মুসলমানগন সম্মেলিত ভাবে শুকর
হত্যা করবে এবং ক্রশ ভেঙ্গে ফেলবে। ১৪. মানুষ সুখ
শান্তি ও নিরাপদে জীবনযাপন করতে থাকবে। এ
অবস্থায় ইয়াজুজ মাজুজের প্রাচির ভেঙ্গে যাবে। ১৫.
ইয়াজুজ মাজুজ বের হয়ে পড়বে। ১৬. আল্লাহর
নির্দেশে ঈসা আ. মুসলমানদের নিয়ে তুর পর্বতে আশ্রয়
নিবেন। কেননা তাদের মুকাবেলা করার
শক্তি কারো থাকবে না। ১৭. ঈসার আ. বদ দুআর
ফলে ইয়াজুজ মাজুজ ধ্বংস হয়ে যাবে। ১৮. ঈসার আ.
বরকতে পৃথিবী ব্যাপী আদল ইনসাদ কায়েম হবে।
শান্তি নিরাপত্তার চাদরে পৃথিবী ঢেকে যাবে। ১৯.
ঈসা আ. বিবাহ করবেন। সন্তান হবে। বিবাহের পর
তিনি পৃথিবীতে ১৯ বছর থাকবেন। সর্বমোট থাকবেন
৪০ বছর। ২০. ঈসার আ. ওফাত হবে । ২১. মুসলমান
জানাযা পড়ে তাকে দাফন করবে। ২২. মানুষ ঈসার আ.
ওসিয়ত মুতাবেক তামীম গূত্রের মুকআাদ নামক এক
ব্যাক্তিকে খলীফা নিবার্চন করবে। ২৩. মুকআদ
ইনতিকাল করবেন। ২৪. পৃথিবীর তিন
স্থানে ভূমি ধসে যাবে ১. প্রাচ্্েয ২. পাশ্চাত্যে। ৩.
জাযিরাতুল আরবে/আরব উপদ্বীপে। ২৫.
একটি ধূয়া প্রকাশিত হবে যা মানুষকে আছন্ন
করে নিবে। মুমিনের সর্দির মত ভাব হবে। আর
কাফেররা বেহুশ হয়ে যাবে। ৪০ দিন পর এ
ধোয়া পরিষ্কার হয়ে যাবে। ২৬. পশ্চিম দিক
থেকে সুর্য উদিত হবে। এরপর আর তাওবা কবুল হবে না।
সুর্য মধ্য আকাশ পর্যন্ত এসে আল্লাহর হুকুমে আবার
পশ্চিম দিকে গিয়েই অস্ত যাবে। তারপর
যথানিয়মে সৃর্যের উদয়-অস্ত হবে। ২৭. দাব্বাতুল আরদ
[ভূমির জš] এটি সাফা পাহাড় ফেটে বের হবে।
তা হবে অদ্ভুত আশৃতির। এ প্রাণীটি মানুষের
সাথে কথা বলবে। অতি দ্রুতবেগে পুরো পৃথিবী ভ্রমন
করে মুমিনের কপালে নূরানী রেখা টেনে দিবে। আর
সীল মেরে দিবে কাফেরের নাকে বা গর্দানে। ২৮.
ইয়ামানের অগ্নি। ইয়ামানের আদন নামক শহর
থেকে একটি অগ্নি বের হয়ে লোক দিগকে সমবেত
হওয়ার স্থান সিরিয়ার দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে তথায়
সমবেত করবে। ২৯. একটি আরমদায়ক বাতাস প্রবাহিত
হবে। যা সমস্ত মুমিন বান্দার প্রাণ হরণ করবে।
দুনিয়ায় কোন মুমিন অবশিষ্ট থাকবেনা। ৩০. এরপর
দুনিয়াতে থাকবে শুধু নিকৃষ্টলোকেরা।
তারা সর্বপ্রকার নিকৃষ্ট কাজে লিপ্ত হবে। হিংস্র
পশুর মত খুনা-খুনীতে লিপ্ত হবে। মূর্তি পুজা করবে।
মঙ্গল অমঙ্গল ও কল্যাণ অকল্যাণের পার্থক্য
ভুলে যাবে। গাধার ন্যয় প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত
হবে। সমগ্র পৃথিবীতে হাবশী কাফেরদের রাজত্ব
চলবে। তারা বায়তুল্লাহকে শহীদ কবে দিবে। এ
অবস্থায় হঠাৎ একদিন সিঙ্গায় ফুঁক
দেয়া হবে এবং কিয়ামত সংঘঠিত হবে। সিঙ্গার
আওয়াজ প্রথমে হালকা ও সহনীয় হবে। পরে এত কঠোর ও
ভীষন হবে যে, আওয়াজের প্রচন্ডতায় সকল
প্রানী মারা যাবে। পূর্বে যারা মারা গেছে তাদের
রুহও বেহুশ হয়ে যাবে। এ
মহাপ্রলয়ে পুরো পৃথিবী ধ্বংশ হয়ে যাবে। কিয়ামত
কি অবস্তায় সংঘটিত হবে বূখারী ও মুসলিমের বর্ণনায়
এর বিবরন এভাবে এসছে যে রাসুলল্লাহ সা. বলেন,
অবশ্যই কিয়ামত সংঘটিত হবে এ অবস্থায় যে, দুই
ব্যক্তি বেচা কেনার জন্য কাপড় খুলে রাখবে,
এখনো মূল্য নিরুপন এবং কাপড় ভাজ
করা হয়নি যে কিয়ামত কায়েম হয়ে যাবে। তিনি আবার
বলেন, বরং কিয়ামত এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠিত হবে, এক
ব্যক্তি উটের দুধ দোহন করতে থাকবে এবং পান করারও
অবকাশ পাবেনা যে কিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, নিশ্চয় কিয়ামত এ অবস্থায়
প্রতিষ্ঠিত হবে যে, এক ব্যক্তি নিজের পানির হাউজ
লেপন করতে থাকবে, কিন্তু তাতে চতুষ্পদ
প্রানিকে পানি পান করাবারও সুযোগ পাবে না ।
আরো বলেন, নিশ্চয় এক ব্যক্তি মুখে লুকমা উঠাবে কিন্তু
তা খাবার আগেই কিয়ামত কায়েম হয়ে যাবে । এই
হাদিসের মর্ম কথা হল যে, আজকাল মানুষ যেভাবে কাজ
কর্মে ব্যস্ত থাকে, তেমনি কিয়ামতের দিনও মানুষ
কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকবে, এমতাবস্তায় হঠাৎ কিয়ামত
সংঘঠিত হয়ে যাবে।
No comments:
Post a Comment