পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে জীন প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে, মানুসকে কাদামাটি ও পানি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে; বিজ্ঞান এ কথা স্বীকার করে নিয়েছে। পবিত্র কোরআন জীন সম্পর্কে বলেছে যে, তাদেরকে আগুনের শীখা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কোরআনের ইংরেজী অনুবাদক জনাব ইউসূফ আলী তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, যে, জীন হল অতি সাধারণ চেতনা (spirit)বা অদৃশ্য শক্তি। এর চাক্ষুস কোন পরিচয় না থাকলেও প্রায় সকল জাতি্তে এই জীন নিয়ে রয়েছে নানা কল্প কাহিনী, যেখানে নানা রকমে রহস্যময় করে তোলা হয়েছে এই সৃষ্টিকে।
এই জীন প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন বলছে,
وَالْجَآنَّ خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ السَّمُومِ
15:27 এবং জিনকে এর আগে লু এর আগুনের দ্বারা সৃজিত করেছি।
জনাব ইউসূফ আলী বলেছেন আগুনের প্রজ্জ্বলিত শীখা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে, অর্থাৎ ধূম্র বিহীন আগুনের শীখা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
সূধী পাঠক, আগুনের সাথে আমাদের সকলেরই মোটামুটি পরিচয় রয়েছে। আগুন বলতে আমরা বুঝি প্রজ্জ্বলিত শীখা; এটি একপ্রকার শক্তি যা তাপ উৎপাদন করে। আমরা জানি এই আগুন নানাভাবে উৎপাদিত হয়; তন্মধ্যে প্রধানত; ১.জ্বালনী পুড়িয়ে,যেমন, কাঠ, কয়লা,তেল ইত্যাদি; এই উৎপাদনকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে অক্সিডেশন বা প্রজ্জ্বলন;অর্থাৎ বাতাসের অক্সিজেনের সহযোগিতায় প্রকৃতিতে প্রাপ্ত হাইড্রোকার্বন জালিয়ে শক্তি উৎপাদন করা। এ ক্ষেত্রে বন্ধনী ভেঙে পরমানুগুলো বিমুক্ত হয়ে কিচু ভিন্ন যৌগ উৎপাদন করে প্রচুর শক্তির বিমোচন ঘটে, অধিকাংশ কার্বন পরমানু কয়লা বা ভূষা কালি রূপে অবশিষ্ট থাকে;আর কিছু কার্বনডাই অক্সাইড রূপে বাতাসে মিশে যায়। 2.ফিসন ও ফিউসন; এই পদ্ধতিতে পরমানুর কেন্দ্রে প্রকৃতিগতভাবে গচ্ছিত শক্তির প্রজ্জ্বলন ঘটানো হয়। ফিসন পদ্ধতিতে একদিক পরমানুর কেন্দ্র মিলিত হয়ে ভারী মৌলের উৎপাদন ঘটেও শক্তির বিমোচন হয়।সূর্যে ও অন্যান্ন নক্ষত্রে মৌলিক উপাধান হাইড্রোজেন রূপান্তরিত হয়ে হিলিয়াম উৎপন্ন করে পাশাপাশি শক্তির বিমোচন ঘটে, আর এই শক্তিই আমরা সূর্যের বিকিরণ হিসেবে দেখে থাকি। অন্যদিকে ফিসন পদ্ধতি হল কোন পরমানুর কেন্দ্র ভেঙে শক্তির উৎপাদন। সাধারণতৎ বৃহৎ পরমানুর কেন্দ্র ভেঙে ক্ষুদ্র পরমানুতে রূপান্তরিত হয়ে শক্তির বিমোচন ঘটায়। ৩.বিদ্যুৎ চুম্বক প্রজ্জ্বলন; চুম্বক ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের মাধ্যামে শক্তির বিমোচন ঘটানোই হল এই পদ্ধতিতে প্রজ্জ্বলন করা। আপনার ঘরের বিদ্যুত বাতিটি কিন্তু এই পদ্ধতিতেই আলো দিয়ে থাকে।
সূধী পাঠক , এখানে আরেকটি বিষয় অবগত হওয়া প্রয়োজন; তা হল ধূঁয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া। ধূঁয়ার বৈজ্ঞানীক সঙ্গা হল-অতি সূক্ষ কণার ভাসমান দৃশ্য। সাধারনতঃঅগ্নি প্রজ্জ্বলনের সময় সিংমিশ্রিত গ্যাসে সূক্ষ কার্বন কণার ভাসমান অবস্থাকেই আমরা ধূঁয়া বলে ভাবি ও দেখি। তাহলে কোন ধরনের অগিনশিখায় ধূঁয়ার সৃষ্টি হতে পারে? স্পষ্টতই বুঝাযাচ্ছে,যখন কোন ভারী হাইড্রোকার্বন জ্বালানীকে দাহ্য করা হয় শুধুমাত্র তখনই ধূঁয়ার সৃষ্টি হতে পারে; উপরের ২য় বা ৩য় কোন পদ্ধতিতেই ধূঁয়ার সৃষ্টি হতে পারেনা। তাহলে উপরের আয়াতে বর্ণিত আগুন আমাদের অতি পরিচিত ১ম শ্রেণীর আগুন নয় যা দিয়ে জিনকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তা অবশ্যই ২য় বা ৩য় প্রকারের আগুন।
বৃটিশ অনুবাদক Muhammad Marmaduke Pickthall জিনকে বর্ণনা করেছেন ‘আগন্তুক’ (Aliens) হিসেবে; তিনি বলেছেন যে, জিনরা পৃথিবীর অধিবাসী নয়, তারা ভীণ গ্রহের অধিবাসী। অদ্যাবদি বিজ্ঞানের ধারণামতে একমাত্র পৃথিবীতেই সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষের বসবাস রয়েছে। ১৯২৭ সালে , Sir Francis Younghusband তার Life in the Stars নামক গ্রন্থে বলেছেন, অন্য গ্রহে ফিরিশ্তাদের বৈশিষ্টধারী প্রাণী রয়েছে। আমাদের সূরুয একটি নক্ষত্র। অধিকাংশ ধর্মাবলম্বীদেরই জীন সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। পৃথিবীতে বিচরণশীল সকল প্রাণী কার্বণজাত পদার্থ ও পানি থেকে তৈরী আর তাদের দৈহিক ক্রিয়া কর্মের জন্যে শক্তির প্রয়োজন, আর এই শক্তির জোগান দেয় তাদের ভক্ষণকৃত খাদ্য রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যামে।শরীরে নানাবিধ রাসায়নিক বিক্রিয়ার মধ্যে খাদ্য থেকে উৎপাদিত চিনি ও রক্তের মধ্যে উপস্থিত অক্সিজেনের বিক্রিয়াই হল শক্তি উৎপাদন বিক্রিয়া; এই বিক্রিয়ায় চিনি ভেঙে পানি ও কার্বণডাইঅক্সাইড উৎপাদিত হয় আর সেই সংঙ্গে উৎপাদিত হয় প্রচুর শক্তি যা আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে তাদের নিজ নিজ কর্মে সহযোগিতা করে।
সূধী পাঠক,আমাদের পৃথিবীতে অবস্থিত প্রাণীদের দেহ হাইড্রোকার্বণ ভিত্তিক। এই প্রাণীদেহ সৃষ্টি হয়েছে প্রধানতঃপ্রোটিন সংশ্লেষন থেকে। এই প্রোটিন সংশ্লেষনের মাধ্যামে প্রাণী কোষ সৃষ্টি প্রকৃতিতে এক মহা বিষ্ময়। বিজ্ঞান তার কষ্টিপাথরে যাঁচাই করে দেখেছে য, প্রাণের মূল উপাদান এই প্রোটিন তৈরী হয়েছে এমাইনো এসিড থেকে;আর এমাইনো এসিড একটি সম্পূর্ণ অজৈব রাসায়নিক পদার্থ। বিজ্ঞান অবাক বিষ্ময়ে ঘোষনা করছে যে, মহাবিশ্বে প্রাণ সৃষ্টি হয়েছে নিস্প্রাণ পদার্থ থেকে। বড়ই আশ্চর্যের বিষয়,বিজ্ঞান শুধু বলেছে,কিন্তু তার সকল মেধা ও অভিধা দিয়ে চেষ্ঠা করেও একটা সরল প্রোটিন অনু তৈরী করতে পারেনি। বিজ্ঞান বলেছে,পৃথিবীতে অবস্থানরত সকল প্রাণীদেহেরই মৌলিক উপাধান কিছু অজৈব মৌল। যাদের সংশ্লেষ থেকে এই প্রাণীজগতের উৎভাবন হয়েছে। স্রষ্টার কোন এক চুল্লিতে ঐ সকল মৌলগুলি প্রজ্জ্বলিত হয়ে উন্মেষ ঘটিয়েছে প্রাণ অনুর। স্রষ্টার এই প্রজ্জ্বলন যে শুধু পৃথিবীর বুকেই ঘটেছে তা নয়। তিনি নিজেই বলেছেন মহাকাশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে প্রানের স্পন্দন।
সূর্যে জীবনের উপস্থিতি
ভৌত ও রাসায়ণিক নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা সূর্যেও প্রাণের অবস্থান রয়েছে বলে ভাবছেন। সূর্যের সর্ববহিস্থঃ স্তরকে বলে Chromosphere and Corona ; এই স্তরের তাপমাত্রা ৪০০০ ডিগ্রী সেঃ। করোনার নীচের স্তরের নাম ফটোস্ফিয়ার (Photosphere) যেখানে তাপমাত্রা ৫৭০০ ডিগ্রী সেঃ; এই তাপমাত্রাই হল সূর্য পৃষ্ঠের তাপমাত্রা। ফটোস্ফিয়ারের ভিতরের স্তরের নাম প্লাজমা ইন্টেরিয়র (Plasma Interior),সেখারকার তাপমাত্রা ৩০,০০০ ডিগ্রী সেঃ; এই তাপমাত্রায় পরমানু তার ইলেট্রন হারায় যা সাধারণ অবস্থায় মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে। সাধারনতঃ গড়ম গ্যাসের ঘনত্ব ভূপৃষ্ঠের বায়ুর মত হয়ে থাকে। সূর্যের বহিঃস্তর থেকে কেন্দ্র অবদি দূরত্বের মাঝামাঝি স্থানে সূর্যের তাপমাত্রা কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রী; আর এখানে পরমানুর সকল ইলেকট্রন মুক্তু হয়ে ঘুরাঘুরি করে আর পরমানুর কেন্দ্রগুলি ধনাত্মক চার্জ বা আয়নরূপে পড়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে পরমানুর কেন্দ্র ও ইলেক্ট্রন বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে,পদার্থের এই অবস্থাকে বলে প্লাজমা (Plasma)। সম্ভবতঃ এই প্লাজমাকেই পবিত্র কোরআন ধূঁয়া বিহীন আগুন বলেছে (smokeless Fire)।সূর্যের কেন্দ্রে তাপমাত্রা প্রায় ১০ মিলিয়ন ডিগ্রী এবং ঘনত্ব স্বর্ণের পাঁচগুন যা পৃথিবীতে প্রাপ্ত যে কোন পদার্থের ঘনত্বের চেয়ে বেশী। সৌর কেন্দ্রে সারাক্ষণ চলছে নিউক্লিয়ার ফিউসন বিক্রিয়া, আর এই বিক্রিয়ায় জ্বালানী হাইড্রোজেন বিগলিত হয়ে হিলিয়াম কেন্দ্র উৎপাদন করে আর সেই সাথে উৎপাদিত হয় শক্তি। আমরা জানি নিউক্লিয়ার বম্ব এই ফিউসন অর্থাৎ বিগলন পদ্ধতিতে শক্ত উৎপাদনের মাধামে ক্রিয়া করে আর এটমিক বম্ব ক্রিয়া করে ফিসন (splitting of the atomic nucleus)পদ্ধতিতে।
বিজ্ঞানী G. Feinberg and R.Shapiro তাদের LIFE BEYOND EARTH গ্রন্থে লিখেছেন য, আমাদের সূর্যের বা অন্যকোন নক্ষত্রে এই প্লাজমাতে জীবন প্রাপ্তির সর্বোচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। ঐ রকম প্রাণীদের তারা নাম দিয়েছেন প্লজমা সাবক(Plasmabeasts)। আমাদের ধারনা মতে এই প্লাজমা সাবক জীন ছাড়া অন্য কিছু হতে পারেনা। পৃথিবীতে জীবনকে বলাহয় রাসায়নিক জীবন, আর প্লাজমাতে অবস্থিত জীবনকে বলা হয় ভৌত প্রাণী। সূর্যে বা তারায় প্লাজমাতে মুক্ত ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জ রূপে আর পরমানু কেন্দ্র গুলো ধনাত্মক চার্জ রূপে ভাসমান থেকে গভীর চুম্বক বল রূপে কাজ করে। জিনরাও এভাবেই শক্তি হিসেবে বর্ণিত হয়েছে,তাদের গাঠনিক কৌশল যতটাই বুঝা গেছে তাতে তারা চুম্বক শক্তির মতই তৈরী হয়েছে বলে মন হয়।যারা মুক্ত আয়নের মত ঘুরে বেড়াতে পারে। এই প্লাজমা ভূমিতে বসবাস উপযোগী এই জীনদের গঠণ ভিত্তি আরও অনেক জটীল, নির্দিষ্ট আকৃতিতে জীনদের ঘুরে বেড়ানোর পিছনে রয়েছে চুম্বক শক্তি। সম্ভবত এমনি কোন বল জিনদের মূল চালিকা শক্তি। সূত্র- Dr. Ibrahim B. Syed, President, Islamic Research Foundation International, Inc
এই জীন প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন বলছে,
وَالْجَآنَّ خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ مِن نَّارِ السَّمُومِ
15:27 এবং জিনকে এর আগে লু এর আগুনের দ্বারা সৃজিত করেছি।
জনাব ইউসূফ আলী বলেছেন আগুনের প্রজ্জ্বলিত শীখা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে, অর্থাৎ ধূম্র বিহীন আগুনের শীখা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
সূধী পাঠক, আগুনের সাথে আমাদের সকলেরই মোটামুটি পরিচয় রয়েছে। আগুন বলতে আমরা বুঝি প্রজ্জ্বলিত শীখা; এটি একপ্রকার শক্তি যা তাপ উৎপাদন করে। আমরা জানি এই আগুন নানাভাবে উৎপাদিত হয়; তন্মধ্যে প্রধানত; ১.জ্বালনী পুড়িয়ে,যেমন, কাঠ, কয়লা,তেল ইত্যাদি; এই উৎপাদনকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে অক্সিডেশন বা প্রজ্জ্বলন;অর্থাৎ বাতাসের অক্সিজেনের সহযোগিতায় প্রকৃতিতে প্রাপ্ত হাইড্রোকার্বন জালিয়ে শক্তি উৎপাদন করা। এ ক্ষেত্রে বন্ধনী ভেঙে পরমানুগুলো বিমুক্ত হয়ে কিচু ভিন্ন যৌগ উৎপাদন করে প্রচুর শক্তির বিমোচন ঘটে, অধিকাংশ কার্বন পরমানু কয়লা বা ভূষা কালি রূপে অবশিষ্ট থাকে;আর কিছু কার্বনডাই অক্সাইড রূপে বাতাসে মিশে যায়। 2.ফিসন ও ফিউসন; এই পদ্ধতিতে পরমানুর কেন্দ্রে প্রকৃতিগতভাবে গচ্ছিত শক্তির প্রজ্জ্বলন ঘটানো হয়। ফিসন পদ্ধতিতে একদিক পরমানুর কেন্দ্র মিলিত হয়ে ভারী মৌলের উৎপাদন ঘটেও শক্তির বিমোচন হয়।সূর্যে ও অন্যান্ন নক্ষত্রে মৌলিক উপাধান হাইড্রোজেন রূপান্তরিত হয়ে হিলিয়াম উৎপন্ন করে পাশাপাশি শক্তির বিমোচন ঘটে, আর এই শক্তিই আমরা সূর্যের বিকিরণ হিসেবে দেখে থাকি। অন্যদিকে ফিসন পদ্ধতি হল কোন পরমানুর কেন্দ্র ভেঙে শক্তির উৎপাদন। সাধারণতৎ বৃহৎ পরমানুর কেন্দ্র ভেঙে ক্ষুদ্র পরমানুতে রূপান্তরিত হয়ে শক্তির বিমোচন ঘটায়। ৩.বিদ্যুৎ চুম্বক প্রজ্জ্বলন; চুম্বক ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের মাধ্যামে শক্তির বিমোচন ঘটানোই হল এই পদ্ধতিতে প্রজ্জ্বলন করা। আপনার ঘরের বিদ্যুত বাতিটি কিন্তু এই পদ্ধতিতেই আলো দিয়ে থাকে।
সূধী পাঠক , এখানে আরেকটি বিষয় অবগত হওয়া প্রয়োজন; তা হল ধূঁয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া। ধূঁয়ার বৈজ্ঞানীক সঙ্গা হল-অতি সূক্ষ কণার ভাসমান দৃশ্য। সাধারনতঃঅগ্নি প্রজ্জ্বলনের সময় সিংমিশ্রিত গ্যাসে সূক্ষ কার্বন কণার ভাসমান অবস্থাকেই আমরা ধূঁয়া বলে ভাবি ও দেখি। তাহলে কোন ধরনের অগিনশিখায় ধূঁয়ার সৃষ্টি হতে পারে? স্পষ্টতই বুঝাযাচ্ছে,যখন কোন ভারী হাইড্রোকার্বন জ্বালানীকে দাহ্য করা হয় শুধুমাত্র তখনই ধূঁয়ার সৃষ্টি হতে পারে; উপরের ২য় বা ৩য় কোন পদ্ধতিতেই ধূঁয়ার সৃষ্টি হতে পারেনা। তাহলে উপরের আয়াতে বর্ণিত আগুন আমাদের অতি পরিচিত ১ম শ্রেণীর আগুন নয় যা দিয়ে জিনকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তা অবশ্যই ২য় বা ৩য় প্রকারের আগুন।
বৃটিশ অনুবাদক Muhammad Marmaduke Pickthall জিনকে বর্ণনা করেছেন ‘আগন্তুক’ (Aliens) হিসেবে; তিনি বলেছেন যে, জিনরা পৃথিবীর অধিবাসী নয়, তারা ভীণ গ্রহের অধিবাসী। অদ্যাবদি বিজ্ঞানের ধারণামতে একমাত্র পৃথিবীতেই সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষের বসবাস রয়েছে। ১৯২৭ সালে , Sir Francis Younghusband তার Life in the Stars নামক গ্রন্থে বলেছেন, অন্য গ্রহে ফিরিশ্তাদের বৈশিষ্টধারী প্রাণী রয়েছে। আমাদের সূরুয একটি নক্ষত্র। অধিকাংশ ধর্মাবলম্বীদেরই জীন সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। পৃথিবীতে বিচরণশীল সকল প্রাণী কার্বণজাত পদার্থ ও পানি থেকে তৈরী আর তাদের দৈহিক ক্রিয়া কর্মের জন্যে শক্তির প্রয়োজন, আর এই শক্তির জোগান দেয় তাদের ভক্ষণকৃত খাদ্য রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যামে।শরীরে নানাবিধ রাসায়নিক বিক্রিয়ার মধ্যে খাদ্য থেকে উৎপাদিত চিনি ও রক্তের মধ্যে উপস্থিত অক্সিজেনের বিক্রিয়াই হল শক্তি উৎপাদন বিক্রিয়া; এই বিক্রিয়ায় চিনি ভেঙে পানি ও কার্বণডাইঅক্সাইড উৎপাদিত হয় আর সেই সংঙ্গে উৎপাদিত হয় প্রচুর শক্তি যা আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে তাদের নিজ নিজ কর্মে সহযোগিতা করে।
সূধী পাঠক,আমাদের পৃথিবীতে অবস্থিত প্রাণীদের দেহ হাইড্রোকার্বণ ভিত্তিক। এই প্রাণীদেহ সৃষ্টি হয়েছে প্রধানতঃপ্রোটিন সংশ্লেষন থেকে। এই প্রোটিন সংশ্লেষনের মাধ্যামে প্রাণী কোষ সৃষ্টি প্রকৃতিতে এক মহা বিষ্ময়। বিজ্ঞান তার কষ্টিপাথরে যাঁচাই করে দেখেছে য, প্রাণের মূল উপাদান এই প্রোটিন তৈরী হয়েছে এমাইনো এসিড থেকে;আর এমাইনো এসিড একটি সম্পূর্ণ অজৈব রাসায়নিক পদার্থ। বিজ্ঞান অবাক বিষ্ময়ে ঘোষনা করছে যে, মহাবিশ্বে প্রাণ সৃষ্টি হয়েছে নিস্প্রাণ পদার্থ থেকে। বড়ই আশ্চর্যের বিষয়,বিজ্ঞান শুধু বলেছে,কিন্তু তার সকল মেধা ও অভিধা দিয়ে চেষ্ঠা করেও একটা সরল প্রোটিন অনু তৈরী করতে পারেনি। বিজ্ঞান বলেছে,পৃথিবীতে অবস্থানরত সকল প্রাণীদেহেরই মৌলিক উপাধান কিছু অজৈব মৌল। যাদের সংশ্লেষ থেকে এই প্রাণীজগতের উৎভাবন হয়েছে। স্রষ্টার কোন এক চুল্লিতে ঐ সকল মৌলগুলি প্রজ্জ্বলিত হয়ে উন্মেষ ঘটিয়েছে প্রাণ অনুর। স্রষ্টার এই প্রজ্জ্বলন যে শুধু পৃথিবীর বুকেই ঘটেছে তা নয়। তিনি নিজেই বলেছেন মহাকাশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে প্রানের স্পন্দন।
সূর্যে জীবনের উপস্থিতি
ভৌত ও রাসায়ণিক নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা সূর্যেও প্রাণের অবস্থান রয়েছে বলে ভাবছেন। সূর্যের সর্ববহিস্থঃ স্তরকে বলে Chromosphere and Corona ; এই স্তরের তাপমাত্রা ৪০০০ ডিগ্রী সেঃ। করোনার নীচের স্তরের নাম ফটোস্ফিয়ার (Photosphere) যেখানে তাপমাত্রা ৫৭০০ ডিগ্রী সেঃ; এই তাপমাত্রাই হল সূর্য পৃষ্ঠের তাপমাত্রা। ফটোস্ফিয়ারের ভিতরের স্তরের নাম প্লাজমা ইন্টেরিয়র (Plasma Interior),সেখারকার তাপমাত্রা ৩০,০০০ ডিগ্রী সেঃ; এই তাপমাত্রায় পরমানু তার ইলেট্রন হারায় যা সাধারণ অবস্থায় মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে। সাধারনতঃ গড়ম গ্যাসের ঘনত্ব ভূপৃষ্ঠের বায়ুর মত হয়ে থাকে। সূর্যের বহিঃস্তর থেকে কেন্দ্র অবদি দূরত্বের মাঝামাঝি স্থানে সূর্যের তাপমাত্রা কয়েক মিলিয়ন ডিগ্রী; আর এখানে পরমানুর সকল ইলেকট্রন মুক্তু হয়ে ঘুরাঘুরি করে আর পরমানুর কেন্দ্রগুলি ধনাত্মক চার্জ বা আয়নরূপে পড়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে পরমানুর কেন্দ্র ও ইলেক্ট্রন বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে,পদার্থের এই অবস্থাকে বলে প্লাজমা (Plasma)। সম্ভবতঃ এই প্লাজমাকেই পবিত্র কোরআন ধূঁয়া বিহীন আগুন বলেছে (smokeless Fire)।সূর্যের কেন্দ্রে তাপমাত্রা প্রায় ১০ মিলিয়ন ডিগ্রী এবং ঘনত্ব স্বর্ণের পাঁচগুন যা পৃথিবীতে প্রাপ্ত যে কোন পদার্থের ঘনত্বের চেয়ে বেশী। সৌর কেন্দ্রে সারাক্ষণ চলছে নিউক্লিয়ার ফিউসন বিক্রিয়া, আর এই বিক্রিয়ায় জ্বালানী হাইড্রোজেন বিগলিত হয়ে হিলিয়াম কেন্দ্র উৎপাদন করে আর সেই সাথে উৎপাদিত হয় শক্তি। আমরা জানি নিউক্লিয়ার বম্ব এই ফিউসন অর্থাৎ বিগলন পদ্ধতিতে শক্ত উৎপাদনের মাধামে ক্রিয়া করে আর এটমিক বম্ব ক্রিয়া করে ফিসন (splitting of the atomic nucleus)পদ্ধতিতে।
বিজ্ঞানী G. Feinberg and R.Shapiro তাদের LIFE BEYOND EARTH গ্রন্থে লিখেছেন য, আমাদের সূর্যের বা অন্যকোন নক্ষত্রে এই প্লাজমাতে জীবন প্রাপ্তির সর্বোচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে। ঐ রকম প্রাণীদের তারা নাম দিয়েছেন প্লজমা সাবক(Plasmabeasts)। আমাদের ধারনা মতে এই প্লাজমা সাবক জীন ছাড়া অন্য কিছু হতে পারেনা। পৃথিবীতে জীবনকে বলাহয় রাসায়নিক জীবন, আর প্লাজমাতে অবস্থিত জীবনকে বলা হয় ভৌত প্রাণী। সূর্যে বা তারায় প্লাজমাতে মুক্ত ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জ রূপে আর পরমানু কেন্দ্র গুলো ধনাত্মক চার্জ রূপে ভাসমান থেকে গভীর চুম্বক বল রূপে কাজ করে। জিনরাও এভাবেই শক্তি হিসেবে বর্ণিত হয়েছে,তাদের গাঠনিক কৌশল যতটাই বুঝা গেছে তাতে তারা চুম্বক শক্তির মতই তৈরী হয়েছে বলে মন হয়।যারা মুক্ত আয়নের মত ঘুরে বেড়াতে পারে। এই প্লাজমা ভূমিতে বসবাস উপযোগী এই জীনদের গঠণ ভিত্তি আরও অনেক জটীল, নির্দিষ্ট আকৃতিতে জীনদের ঘুরে বেড়ানোর পিছনে রয়েছে চুম্বক শক্তি। সম্ভবত এমনি কোন বল জিনদের মূল চালিকা শক্তি। সূত্র- Dr. Ibrahim B. Syed, President, Islamic Research Foundation International, Inc
No comments:
Post a Comment